অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করুন: নতুনদের জন্য একটি পূর্ণাংগ গাইডলাইন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল অনলাইনে বড় বড় ব্র্যান্ডদের পণ্য মার্কেটিং করে সেলস কমিশন এর মাধ্যমে ঘরে বসে টাকা আয়ের একটি মাধ্যম। এটি অনলাইনে আয় করার বিশ্বব্যাপি অন্যতম জনপ্রিয় একটি উপায়। বর্তমানে এই এফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রীর আকার ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অনেক দেশের তরুণেরা এ পথে আয় করে স্বনির্ভর হয়েছে।
আপনিও কি চান বাসায় বসে কাজ করে অনলাইনে উপার্জন করতে? তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
শুরুতেই আমাদের জানতে হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে। আ্যফিলিয়েট মার্কেটিং হল অন্য কোম্পানির পণ্য প্রমোট করে এর বিনিময়ে কমিশন লাভ (যখন ক্রেতা পণ্য কিনবে)। এই মডেলটি আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো এখনো সেভাবে গ্রহণ করেনি, কিন্তু বিশ্বব্যাপি যত বড় বড় কোম্পানিগুলো আছে তাদের প্রায় সবারই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। আবার অনেকগুলো কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছে অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক। যেমনঃ আমাজন অ্যাসোসিয়েটস একটি বিশাল ও সুপরিচিত অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক। এখন চেস্টা করব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি ভাবে কাজ করে সে ব্যাপারে আপনাদের একটা ধারণা দেবার। এখানে মূলত ৩ টি পক্ষ জড়িতঃ
প্রোডাক্ট বিক্রেতা
পণ্য বা প্রোডাক্টের বিক্রেতা মূলত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম শুরু করে থাকেন। এটা হতে পারে বড় বড় কোম্পানি যেমন অ্যামাজন অথবা যেকোন কোম্পানি যারা তাদের পণ্য অথবা সার্ভিস অফার করছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় Adidas এর কথা। আমরা সবাই এই বিশ্বখ্যাত স্পোর্টস ব্র্যান্ডের সাথে পরিচিত। Adidas এরও অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে।
অ্যাফিলিয়েট পার্টনার
কনটেন্ট পাবলিশার অথবা ভিডিও ক্রিয়েটর যারা কোন একটা অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ পার্টনার হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। তারা তাদের কনটেন্ট এর মাধ্যমে সেলার এর প্রোডাক্ট প্রোমোট করছে এবং বিক্রি হলে তার বিনিময়ে একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজের কমিশন পাচ্ছে। আপনি যেহেতু এই আর্টিকেলটি পড়ছেন তার মানে আপনিও একজন অ্যাফিলিয়েট পার্টনার হতে চান!
কনজিউমার বা ক্রেতা
কনজিউমার বা ক্রেতা পাবলিশারদের কন্টেন্ট দেখে বা পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে টাকার বিনিময় পণ্য অথবা সার্ভিস কিনছে।
যখন একজন পাবলিশার একটা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ সাইন আপ করে তখন সে যে পণ্য প্রমোট করতে চায় তাকে তার জন্য একটা ‘অ্যাফিলিয়েট লিংক’ দেওয়া হয়। তখন তিনি তার তৈরিকৃত কনটেন্ট এ এই লিংকটা ব্যবহার করে থাকেন। কনটেন্ট হতে পারে একটা ব্লগ পোস্ট বা রিভিউ আর্টিকেল অথবা ভিডিও। যখন একজন কনজিউমার এই কনটেন্টটি দেখে বা, পড়ে প্রোডাক্টটা কিনার ব্যাপারে কনভিন্সড হবে এবং ওই লিঙ্কটাতে ক্লিক করবে তখন তার ব্রাউজারে একটা ছোট্ট ফাইল (যার নাম কুকি) সেভ হয়ে যাবে। সে যদি ওই পণ্যটা শেষ পর্যন্ত কিনেই ফেলে তখন ঐ কুকি ফাইলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেলার আইডেন্টিফাই করতে পারবে এই সেলটা কোন অ্যাফিলিয়েট পার্টনার (পাবলিশার) এর মাধ্যমে হয়েছে এবং তখন সে তার একটা নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ কমিশন পাব্লিশারকে শেয়ার করবে। কমিশনের পার্সেন্টেজ নির্ভর করে আপনি কোন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করছেন এবং কি ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন। এটা নিয়ে আমরা সামনের দিকের চ্যাপ্টারগুলো তে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব।
এখন পুরো ব্যাপারটা একটা রিয়েল লাইফ উদাহরণের মাধ্যমে আরও একটু পরিষ্কার করে বলা যাক। ধরুন আমি একজন পাবলিশার আমি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছি মোবাইলের এক্সেসরিজ এর উপর। সেই সাথে আমি অ্যামাজন এসোসিয়েটস একজন অ্যাফিলিয়েট পার্টনার হিসেবে অংশগ্রহণ করেছি। আমি যখন আমার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন রকমের মোবাইলের অ্যাক্সেসরিজ এর উপর কনটেন্ট পাবলিশ করি ও সেখানে কিছু অ্যাফিলিয়েট লিংক বসিয়ে দেই। এখন যদি একজন ভিজিটর এসে আমার লেখা আর্টিকেলগুলো পড়ে যদি কোন একটা এক্সেসরিজ কিনতে চায় এবং লিংকে ক্লিক করে অ্যামাজনে গিয়ে সেখান থেকে পণ্যটি কিনে ফেলে তখন তার বিনিময় আমি একটা নির্দিষ্ট অংকের কমিশন পাব। কারণ আমি তো মূলত আমার লেখা আর্টিকেল এর মাধ্যমে তাকে কিনতে উদ্বুদ্ধ করেছি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো?
এটা এমন একটা পেশা যার মাধ্যমে আপনি দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা টাকা কামাতে পারবেন, এমনকি আপনি যখন ঘুমাচ্ছেন তখনও! কি বিশ্বাস হচ্ছে না? আচ্ছা একটু ব্যাখ্যা করে বলা যাক।
এফিলিয়েট মার্কেটিং যখন আপনি শুরু করবেন তখন প্রথম প্রথম আপনাকে অনেক খাটাখাটনি করতে হবে। আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, ভালো ভালো আর্টিকেল লিখে সেখানে পাবলিশ করতে হবে, ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ করতে হবে। এভাবে প্রথম দুই তিন মাস পরিশ্রম করার পর যখন আপনার ওয়েবসাইটটি স্টাবলিশড হয়ে যাবে এবং আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন ট্রাফিক আসতে থাকবে তখন আপনি আফিলিয়েট কমিশন পাওয়া শুরু করবেন। এরপর থেকে কিন্তু আপনার আর প্রথম দিককার মত অনেক সময় দেওয়া লাগবে না। কেবল নিয়মিত বিরতিতে একটা-দুটো করে নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করতে থাকলেই হবে। কিন্তু আপনার আফিলিয়েট কমিশন ইনকাম চলতেই থাকবে। কি মজা তাই না! এ ধরণের ইনকাম কে বলা হয়ে থাকে ‘প্যাসিভ ইনকাম’। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই আসে ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকামের কথা।
নিচে একজন নতুন শুরু করা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর ইনকাম রিপোর্টের স্ক্রিনশট দেওয়া হলঃ
তবে আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে। আপনি যদি আশা করে থাকেন যে প্রথম মাস থেকেই আপনি বিপুল অঙ্কের ডলার কামানোর শুরু করবেন তাহলে সেটা ভুল। হ্যাঁ, অনেক টাকা ইনকাম করা অবশ্যই সম্ভব কিন্তু তার জন্য আপনাকে একটা সুন্দর পরিকল্পনা নিয়ে পরিশ্রম করে যেতে হবে এবং ফলাফল পাওয়ার জন্য অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে।
আপনি আপনি কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং ইনকাম শুরু করতে কয় মাস সময় লাগবে এটা পুরোপুরি নির্ভর করে আপনার কাজের দক্ষতা কেমন আপনি কি পরিমাণ সময় এবং শ্রম দিচ্ছেন তার উপর। সাধারণভাবে বলা যায় একজন নতুন শুরু করা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর প্রথম ইনকাম আসতে ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। আর সর্বোচ্চ কত টাকা ইনকাম করা যায় এর আসলেই কোন লিমিট নেই। আপনি প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন! হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য হলেও এটা কিন্তু একদম সত্য। নিচে প্যাট ফ্লিন নামে একজন অসম্ভব সফল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর ইনকামের স্ক্রিনশট দেওয়া হলঃ
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘স্মার্ট প্যাসিভ ইনকাম’ এর প্রতিষ্ঠাতা প্যাট ফ্লিন এর কয়েকটি অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক থেকে প্রাপ্ত কমিশন হতে মোট ইনকাম ছিল ১00000 ডলার। সত্যি কথা বলতে কি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রিতে ছয় অঙ্কের ইনকাম খুবই কমন। পুরো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির সাইজ ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি আর এটা দিনকে দিন বড় থেকে আরো বড় হচ্ছে, নতুন নতুন কোম্পানিগুলো তাদের নিজ নিজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করছে।
আপনি কি আগ্রহী আপনার নিজের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটটি শুরু করতে এবং প্যাসিভ ইনকাম করতে? তাহলে চলুন শুরু করা যাক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং step-by-step গাইড।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন বিষয়ে জানা প্রয়োজন? কিভাবে শুরু করবেন?
এই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স এ আমরা চেষ্টা করব আপনাদের একটা সংক্ষিপ্ত কিন্তু পূর্ণাংগ ধারণা দেবার। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টিউটোরিয়াল টি আমরা নিচের ৬টি ধাপে ভাগ করেছি:
- ১ম ধাপ: আপনি কোন প্লাটফর্মে কাজ করতে চান তা ঠিক করুন
- ২য় ধাপ: আপনি কোন নিশ বা প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান তা ঠিক করুন
- ৩য় ধাপ: পছন্দসই একটি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ জয়েন করুন
- ৪র্থ ধাপঃ দুর্দান্ত সব কনটেন্ট (আর্টিকেল/ভিডিও) তৈরি করুন
- ৫ম ধাপ: আপনার ওয়েবসাইট (অথবা ইউটিউব চ্যানেলে) এ পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রাফিক নিয়ে আসুন
- ৬ষ্ঠ ধাপ: অ্যাফিলিয়েট লিংক গুলো এমনভাবে বসিয়ে দিন যেন ভিজিটররা ক্লিক করে
শেষ ধাপ, ক্লিককে সেল এ রুপান্তর, এখানে সত্যিকার অর্থে আমাদের করার কিছুই নেই। কারন, প্রোডাক্ট পেজ এ যাওয়ার পর ক্রেতা তা কিনবে কি না সেটা কেবলই তার সিদ্ধান্ত। আমরা কেবল বাছাই করে ভালো কোন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ জয়েন করতে পারি যার কনভার্সন রেট ভালো এবং প্রমোট করার জন্য ভালো প্রোডাক্ট বেছে নিতে পারি।
নোটঃ এই টিউটোরিয়ালে আমরা কিছু কিছু টার্ম সরাসরি ইংরেজি শব্দে ব্যবহার করব, কারণ ওই শব্দগুলোর যদিও আক্ষরিক বাংলা অনুবাদ সঠিক অর্থবহ নয়।
প্রথম ধাপ: প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিভিন্ন প্লাটফর্মে করা যায়। যেমনঃ ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল এমনকি ইনস্টাগ্রাম পেইজের মাধ্যমেও। কিন্তু সবচাইতে কমন দু’টি প্লাটফর্ম হল ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইট বা ব্লগ। চলুন তবে এই দুইটি প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাকঃ
ইউটিউব
আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারেন। এজন্য আপনি যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রমোট করতে চান তার উপর রিভিউ ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং প্রোডাক্ট এর অ্যাফিলিয়েট লিংক ভিডিও ডেসক্রিপশন এ বসিয়ে দিতে হবে। যারা আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলো দেখবে তারা হয়তোবা ডেসক্রিপশন এর লিংকে ক্লিক করে ওই প্রোডাক্টটা ক্রয় করতে পারে এবং তাহলে আপনিও কমিশন পেয়ে যাচ্ছেন!
তবে বাস্তবতা হচ্ছে ইউটিউব অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য যদিও অন্যতম প্ল্যাটফর্ম কিন্তু এটা সবার জন্য উপযোগী নয়। ইউটিউব সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্যই বেশী উপযোগী অর্থাৎ যাদের অলরেডি একটা বড় ফ্যানবেজ আছে। সাধারণ মানুষদের জন্য ইউটিউব এর ভিডিও ডেসক্রিপশনে যে অ্যাফিলিয়েট লিংক দেওয়া হয় তার click-through rate (CTR) খুবই কম। তাই সাধারণ মানুষের এবং নতুনদের জন্য ইউটিউব চ্যানেল কে আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে রেকমেন্ড করি না। তাই আমরা এখন আলাপ করতে যাচ্ছি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে ভাল অপশনটা নিয়ে।
ওয়েবসাইট বা ব্লগ
একটা ওয়েবসাইটে অথবা ব্লগে পাবলিশ করা আর্টিকেল এর মাধ্যমেও আপনি অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করতে পারেন। যেটা আগেই বললাম ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বেস্ট অপশন। তাই এখান থেকে এই আর্টিকেলের বাকি অংশটুকুতে আমরা কেবলমাত্র ওয়েবসাইট কেন্দ্রিক কথাবার্তাই বলব।
একটা ওয়েবসাইট তৈরি করা এখন যতটা সহজ আগে কিন্তু ততটা সহজ ছিল না। এখন চাইলেই আপনিও কিন্তু নিজের একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে কয়েকটা ধাপ ফলো করতে হবেঃ
- প্রথমেই আপনাকে ভালো কোন কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনতে হবে। এটা হচ্ছে একটা সার্ভার যেখানে আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করবেন। ভালো হোস্টিং প্রোভাইডার এর মাঝে আছে নেইমচিপ, হোস্টগেটর, ব্লুহোস্ট ইত্যাদি। হোস্টিং এর দাম কিন্তু খুব বেশি না, বছরে ৪০ থেকে ৬০ ডলারের মাঝেই পেয়ে যাবেন।
- এরপর আপনাকে একটা ‘ডোমেইন নাম’ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটের এড্রেস যে নামে হবে। যেমনঃ www.prothom-alo.com এটা প্রথম আলোর ডোমেইন নাম। ডোমেইনের দাম খুব বেশি না বছরে ১২থেকে ১৫ ডলার এর মাঝেই পেয়ে যাবেন। যে কোম্পানি থেকে হোস্টিং কিনবেন, সেখান থেকেই ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
- এবার আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করতে হবে। ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মেথড ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) দিয়ে তৈরি করা। এর মাধ্যমে আপনি কোনরকম কোডিং করা ছাড়াই সুন্দর ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। তাহলে আপনাকে এখন ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করতে হবে। তবে কিছু কিছু হোস্টিং প্যাকেজ এ ওয়ার্ডপ্রেস আগে থেকেই ইনস্টল করা থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস কিন্তু একদম ফ্রি!
- ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করা হয়ে গেলে আপনার পরবর্তী কাজ হবে WordPress এর বিভিন্ন থিম ব্যবহার করে আপনার পছন্দমত ওয়েবসাইটটি ডিজাইন করা। থিম হল অনেকটা পোষাক-পরিচ্ছদের মত একটা বিষয়। বিভিন্ন পোষাকে যেমন মানুষের চেহারায় বিভিন্ন রূপ ধারণ করে, থিমও তেমন ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন Look & Feel দেয়। কিছু থিম আছে ফ্রি আর কিছু আছে পেইড। পেইড থিম কেনা জরুরি না। একটা সুন্দর ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য ফ্রি থিমই যথেষ্ট।
এই তো হয়ে গেল আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট! এখন আপনি তৈরি আপনার ওয়েবসাইটে কনটেন্ট পাবলিশ করার জন্য। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে আপনি কোথাও যদি আটকে যান তাহলে অনলাইনে অসংখ্য টিউটোরিয়াল আছে প্রতিটি ধাপের জন্যই। আপনি তার সাহায্য নিতে পারেন।
যখন আপনার ওয়েবসাইট রেডি হয়ে যাবে তখন আপনার কাজ দুর্দান্ত সব কনটেন্ট তৈরি এবং পাবলিশ করা যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা উপকৃত হবে। সে আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করা এবং বিভিন্ন জায়গায় লিংকটা যুক্ত করে দেওয়া যেন ওয়েবসাইটের ভিজিটর আপনার আর্টিকেল পড়ে ওই প্রোডাক্ট কিনতে উদ্বুদ্ধ হলে ওই লিঙ্কে ক্লিক করে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পারেন। এটাই তো আমাদের আসল উদ্দেশ্য। আর্টিকেল কিভাবে লিখতে হয়, অ্যাফিলিয়েটলিংক কি ভাবে ব্যবহার করলে বেশি ক্লিক পাওয়া যায় এগুলো নিয়ে আমরা সামনের চ্যাপ্টারগুলোতে আরও বিস্তারিত আলাপ করব কিন্তু তার আগে চলুন আরো দু’একটি বিষয় জেনে নেওয়া যাক।
২য় ধাপ: নিশ সিলেকশন
এখন একটা কঠিন বাস্তবতার কথা আপনাদের বলব। ইন্টারনেটের দুনিয়া এখন অনেক বেশি সমৃদ্ধ। আপনি যদি আজকে একটা নতুন ওয়েবসাইট শুরু করতে চান, এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে আপনাকে অনেক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে। Statista এর হিসেব মতে, ২০২০ সাল পর্যন্ত কেবলমাত্র আমেরিকাতেই ব্লগারের সংখ্যা ৩০ মিলিয়ন পার করেছে!
তাহলে এই সেচুরেটেড ব্লগস্ফিয়ারের মধ্যে আপনি কিভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করবেন?
এর উত্তর হচ্ছে আপনাকে একটা ক্ষুদ্র ‘নিশ’ এবং কয়েকটি ‘কিওয়ার্ড’ বাছাই করে নিতে হবে যা নিয়ে আপনি কাজ করবেন। নিশ বলতে বোঝায় খুব ছোট্ট কোন টপিক বা, কাজের ক্ষেত্র। ধরুন আপনি বাচ্চাদের ডায়াপার নিয়ে কাজ করতে চান, ‘বেবি ডায়াপার’ আপনার ‘নিশ’। আর বেবি ডায়াপার মানুষ যেভাবে লিখে ইন্টারনেটে সার্চ করে সেগুলো হচ্ছে কিওয়ার্ড। যেমনঃ Best Budget Baby Diaper এটা একটা কী-ওয়ার্ড হতে পারে। তাহলে শুরুতেই প্রবল প্রতিযোগিতা এড়াতে আপনাকে এরকম ছোট্ট কোন নিশ সিলেক্ট করতে হবে এবং কিছু কিওয়ার্ড টার্গেট করতে হবে যেখানে প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। এবং এর নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটটি দাঁড় করাতে হবে।
নিশ সিলেকশন করতে হলে আপনাকে কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যেমনঃ
1. ব্যবসার সুযোগ (Business Potential)
নিশ এবং কী-ওয়ার্ড সিলেকশনের এটাই প্রথম এবং প্রধান বিবেচ্য বিষয় যেটা নির্ভর করে নিচের ফ্যাক্টরগুলোর উপরঃ
- সার্চ ভলিউম (Search volume) – একটা কিওয়ার্ড লিখে কতজন মানুষ গুগলে সার্চ করে থাকে। এর উপরে নির্ভর করছে আপনার ওয়েবসাইটে কি পরিমান ট্রাফিক পাওয়া সম্ভব।
- প্রোডাক্ট এর দাম – ঐ নিশ এর প্রোডাক্ট এর দাম যত বেশি হবে, বিক্রি করলে আপনার কমিশন পার্সেন্টেজ তত বাড়বে, সহজ হিসাব :)।
- সম্পর্কিত অন্যান্য প্রোডাক্ট আছে কি না (Available vertical product market) – মানুষ সাধারণত একসাথে জিনিশপত্র কেনাকাটা করে। অর্থাৎ বাচ্চার ডায়াপার কিনতে গিয়ে বাচ্চার জরুরী অন্যান্য আরো দশটা জিনিশ একসাথে অর্ডার করে বসে। তাই এমন নিশ সিলেক্ট করুন যেখানে অন্যান্য প্রোডাক্টের সংখ্যা এবং ভ্যারাইটি যদি অনেক বেশি। তাহলে আপনার প্রমোট করা প্রোডাক্ট কিনতে গিয়ে ক্রেতা একসাথে অন্যান্য অনেক জিনিশ কেনা সম্ভাবনাটা বেশি থাকে। এর ফলে আপনার কমিশন আয় বেড়ে যাবে।
2. প্রতিযোগিতা (Competition)
আপনার টার্গেট করা নিশ এর হয়তো অনেক হাই বিজনেস পটেনশিয়াল আছে কিন্তু প্রতিযোগিতাও যদি অনেক বেশি হয় তাহলে আপনার ঐ নিশ এভয়েড করা উচিত। তাই শুরুতেই আপনাকে কী-ওয়ার্ড রিসার্চ এর মাধ্যমে কম্পিটিশন এবং আপনি গুগলের প্রথম পেইজে আসতে পারবেন কিনা সেই সম্ভাবনা যাচাই করে নিতে হবে। কারণ গুগল সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকে আসতে না পারলে আপনার ওয়েবসাইটে কেউ ভিজিট করবে না, ফলে আপনার ওয়েবসাইট থেকে কোন সেল আসবে না এবং আলটিমেটলি আপনি কোন কমিশন পাবেন না!
কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন সফটওয়্যার অথবা টুল এর সাহায্য নিতে হবে। যেমনঃ Ahrefs, SEMRush, Keyword Revealer, MOZ ইত্যাদি। কী-ওয়ার্ড রিসার্চ এর বিস্তারিত গাইড লাইন নিয়ে ইউটিউবে অনেক ফ্রি ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে। চাইলে দেখে নিতে পারেন।
3. আগ্রহ এবং জ্ঞান
ওয়েবসাইটে খুব তথ্যবহুল এবং ভালো মানের আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে যার মাধ্যমে ভিজিটররা তাদের সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবে। তাই আপনি যে নিশ নিয়ে কাজ করতে চান সে নিশে আপনার অন্ততপক্ষে প্রাথমিক কিছু ধারণা থাকা ভালো। এটা আপনাকে ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে সাহায্য করবে। সেই সাথে বিষয়টা নিয়ে আপনার কিছুটা হলেও আগ্রহ থাকা উচিত। কারণ আর্টিকেল লিখতে হলে আপনার ওই টপিক নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে। একদমই আগ্রহ না থাকলে আপনি কিছুদিন পরেই কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট কিছুদিন পরেই তার লক্ষ্য হারিয়ে ফেলে শুধুমাত্র এ কারণেই।
4. কি কি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এভেলেবেল আছে
যদিও অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম সিলেকশন করা নিশ সিলেকশন এর পরের কাজ, তারপরেও এটা একটা ভালো আইডিয়া যে নিশ সিলেকশনের সময়ই ঐ নিশ এ কি কি অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে, কারা অফার করছে সেটা একটু যাচাই করে নেওয়া।
কি? একটু জটিল মনে হচ্ছে! চিন্তার কোন কারণ নেই। AuthorityHacker এর Niall Roche নতুনদের সুবিধার কথা চিন্তা করে 90 টার বেশি বাছাইকৃত ভালো নিশ এর একটি তালিকা পাবলিশ করেছে। এখান থেকেই বাছাই করে ফেলুন না আপনার প্রথম অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটের নিশ!
৩য় ধাপ: অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম সিলেকশন
ইদানীংকালের সব বড় বড় গ্লোবাল কোম্পানিরই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। সফটওয়্যার, স্পোর্টস, ফ্যাশন, ট্রাভেল, এডুকেশন, অনলাইন কোর্স ইত্যাদি সব সেক্টরেই অনেক ভালো ভালো অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। এক এক অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর টার্মস এন্ড কন্ডিশন এবং কমিশন পার্সেন্টেজ এক এক ধরনের। তাই আপনি কোন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চান তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরী।
প্রথমতঃ কমিশন পার্সেন্টেজ। কারণ কমিশন পার্সেন্টেজ যত বেশি হবে, আপনার ইনকাম এর পরিমাণ যত বাড়বে। সহজ হিসাব। তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন দেওয়া হয় সেটা শুরুতেই জেনে নিন।
দ্বিতীয়তঃ কুকির মেয়াদকাল (Cookie life)। এখন কথা হল কুকি কি?
যখন একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটের অ্যাফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে মার্চেন্ট এর প্রোডাক্ট পেইজে যায় তখন তার ডিভাইসে একটা ছোট্ট ফাইল সেইভ হয়। এই ফাইলটির নাম কুকি। কুকি মূলত দু’টি কাজ করেঃ
- কুকির মাধ্যমে মার্চেন্ট বুঝতে পারে এই সেলটি কার মাধ্যমে এসেছে (অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনি। কারণ আপনার ওয়েবসাইটে রিভিউ পড়ে ক্রেতা লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্ট পেইজে এসেছে)।
- কুকির সাধারণত একটা মেয়াদকাল থাকে। সেই মেয়াদকাল পর্যন্ত ক্রেতা মার্চেন্ট ওয়েবসাইট থেকে যা কেনাকাটা করবে তার জন্য আপনি কমিশন পাবেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অ্যামাজন এর কুকির মেয়াদ ২৪ ঘন্টা। তাই আপনার ওয়েবসাইট থেকে একজন ভিজিটর অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে গেলে, সে আগামী ২৪ ঘন্টা যা কেনাকাটায় করবে আপনি তার জন্য কমিশন পাবেন! সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কুকির মেয়াদ যত লম্বা হবে আপনার কমিশনের পরিমাণ ততই বেশি হবে।
এ দুটো বিষয় বিবেচনা করে বিভিন্ন সেক্টরে বাছাই করা সবচাইতে ভালো অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলোর একটা লিস্ট আপনাদের জন্য উপস্থাপন করছি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টিপস হিসেবেঃ
বেস্ট মার্কেটিং ও বিজনেস অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
1. HubSpot
কমিশন: 15% recurring or ১০0% of the first month’s revenue
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৯০ দিন
2. Elementor
কমিশন: 50% per sale
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৪৫ দিন
3. AWeber
কমিশন: ৩০% recurring
কুকির মেয়াদ (Cookie life): এক বছর
4. ConvertKit
কমিশন: ৩০% recurring
Cookie Duration: ৩০ দিন
5. Fiverr
কমিশন: $১৫ – ৫০for Fiverr CPA, $১০ CPA + ১০% RevShare for Fiverr Hybrid or ৩০% of every Fiverr Learn course order
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
6. SEMRush
কমিশন: ৪০% recurring
কুকির মেয়াদ (Cookie life): দশ বছর
বেস্ট অনলাইন কোর্স অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
1. Coursera
কমিশন: ২০ – ৪৫%
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
2. Kajabi
কমিশন: ৩০% recurring
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
বেস্ট ওয়েবসাইট বিল্ডার অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
1. Shopify
কমিশন: ২০০%
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
2. Wix
কমিশন: $১০০ per Premium sale
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
বেস্ট ওয়েব হোস্টিং অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
- Bluehost
কমিশন: $৬৫ per sale
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৪৫ দিন
- HostGator
কমিশন: $৬৫ to $১২৫ per signup
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৬০ দিন
- Kinsta
কমিশন: Up to $৫০০ per referral + ১০% recurring
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৬০ দিন
বেস্ট রিটেইল অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
1. Amazon Associates
কমিশন: ১ – ১০% (depending on the product category)
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ২৪ ঘন্টা
2. eBay Partner Network
কমিশন: ৫০ – ৭০% of auction fees (depending on the product category)
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ২৪ ঘন্টা for “buy it now” items, ১০ দিন for auction items
3. Target
কমিশন: ১ – ৮% (depending on the product category and sales volume)
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৭ দিন
বেস্ট ট্রাভেল (ভ্রমণ বিষয়ক) অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
1. BoatBookings
কমিশন: ২০% + ১০% for returning customers
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
2. TripAdvisor
কমিশন: ৫০%
কুকির মেয়াদ (Cookie life): Session
বেস্ট ফিন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্ট অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম
1. Capitalist Exploits
কমিশন: ৫০%
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩৬৫ দিন
2. Kabbage
কমিশন: $২৫০ per qualified lead
কুকির মেয়াদ (Cookie life): Unknown
3. Sage Financials
কমিশন: $১০ per Cloud subscription sale, $৭ for all other sales, $৫ for a free trial
কুকির মেয়াদ (Cookie life): ৩০ দিন
৪র্থ ধাপ: দুর্দান্ত কনটেন্ট তৈরি এবং পাবলিশ করা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে খুব ভালো মানের কনটেন্ট পাবলিশ এর ওপর যেখানে প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক ন্যাচারালি দেওয়া যায়। এই উদাহরণটা লক্ষ্য করুনঃ
এখানে verywellfamily.com এর Julie Evans বিভিন্ন ধরনের ‘পটি চেয়ার’ রিভিউ করেছেন, তাদের ভাল/খারাপ দিকগুলো সহজেই বোঝা যায় এমন ভাবে তুলে ধরেছেন। সুতরাং একজন বাচ্চার মা, যিনি নিজের বাচ্চার জন্য পটি চেয়ার খুঁজছেন, তিনি এই আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হবেন। হয়তোবা এখান থেকে লিংকে ক্লিক করে একটা পটি চেয়ার অর্ডার করে ফেলতে পারেন! অ্যাফিলিয়েট ওয়েব সাইটের কনটেন্ট এমনই হওয়া উচিত।
কিভাবে ভাল কনটেন্ট লিখতে হয় এখন সে ব্যাপারে কিছু প্র্যাক্টিকাল গাইডলাইন দেবঃ
টপিক সিলেক্ট করা
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটে সাধারণত দুই ধরনের আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়ঃ প্রোডাক্ট রিভিউ আর্টিকেল এবং ইনফরমেটিভ আর্টিকেল। ইনফরমেটিভ আর্টিকেল এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে বেশি সংখ্যক ভিজিটর আকৃষ্ট করে নিয়ে আসা হয় আর রিভিউ আর্টিকেল এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট প্রমোট করে ভিজিটরদের মার্চেন্ট এর ওয়েবসাইটে পাঠানো হয়। একটা ওয়েবসাইটে এ দুই ধরনের আর্টিকেল এর মধ্যে ভারসাম্য থাকা উচিত।
- ‘কিওয়ার্ড রিসার্চ’ এর মাধ্যমে এমন ‘কিওয়ার্ড খুঁজে বের করে নিয়ে আসতে হবে যার সার্চ ভলিউম বেশি কিন্তু কম্পিটিশন কম। অতঃপর ঐ ‘কিওয়ার্ড গুলো ব্যবহার করে আর্টিকেল সাজাতে হবে।
- রিভিউ আর্টিকেল লেখার সময় অবশ্যই ‘বায়িং ইনটেন্ট’ (buying intent) কিওয়ার্ড টার্গেট করতে হবে কারণ এই কিওয়ার্ডগুলোই সেলস এ কনভার্ট হয় বেশি।
মূল কিওয়ার্ডের আগে-পরে কিছু মডিফায়ার ব্যবহার করে সেটাকে বায়িং ইনটেন্ট কিওয়ার্ড এ পরিণত করা যায়। তেমন কিছু কমন মডিফায়ার এর লিস্ট নিচে দেওয়া হলঃ- Best (শুরুতে ব্যবহার হয় যেমনঃ Best baby bottle sterilizer)
- Top (শুরুতে ব্যবহার হয় যেমনঃ Top smartphones 2021)
- Review (শেষে ব্যবহার হয় যেমনঃ Drone review)
- vs (মাঝে ব্যবহার হয়। সাধারণতঃ একটি প্রোডাক্ট এর দুটো মডেলের মধ্যে তুলনা করার জন্য)
রিসার্চ করা
আপনি যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের রিভিউ করবেন সেটা নিয়ে আপনার গভীরভাবে রিসার্চ করতে হবে। সবচাইতে ভালো হয় আপনি যদি ওই প্রোডাক্ট কিনে নিজে কিছুদিন ব্যবহার করেন। কিন্তু সেটা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের Gary Vaynerchuk এর পরামর্শ অনুসরণ করতে হবে। Gary Vaynerchuk বলেছেনঃ “document, don’t create.” অর্থাৎ ওই প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে অনলাইনে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে। অতপরঃ তার ভিত্তিতে নিজের ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে। রিসার্চের জন্য অনলাইনে অনেক সোর্স আছে। আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে একটা তালিকা দেওয়া হলঃ
- Google search (Websites/Blogs)
- YouTube Videos
- Product in Amazon website including the review by the customers
- Quora (you can post your own questions here)
- BuzzSumo
- Stack Exchange
- Wikipedia etc.
কনটেন্ট কিভাবে সাজাবেন
একটা আর্টিকেলের বেসিক কয়েকটা অংশ থাকে। যেমনঃ
- টাইটেল বা হেডলাইন (Title/Headline)
- প্রথম প্যারাগ্রাফ (First Paragraph/Introduction)
- মূল বডি (Main body) এবং
- উপসংহার (Conclusion/Final Statement)
চলুন প্রতিটি অংশ নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত জেনে নেই।
টাইটেল বা হেডলাইন
- টাইটেল হতে হবে একদম সুনির্দিষ্ট যেন এবং মূল লেখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পাঠক যেন বুঝতে পারে এই আর্টিকেল পড়ে সে কি পেতে যাচ্ছে। যেমনঃ “২০২১ সালের ২৫ হাজার টাকার নিচে সেরা ৩ টি স্মার্টফোন” – এখানে বুঝতেই পারছেন আর্টিকেলের কন্টেন্ট কি হবে।
- যেখানে প্রযোজ্য ব্র্যাকেট ব্যবহার করুন বাড়তি কিছু তথ্য দিতে। যেমনঃ A comprehensive guide for SEO (2022 Update)।
- লম্বা টাইটেল ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, লম্বা টাইটেল এর লেখা পাঠকরা বেশি পড়ে এবং শেয়ার করে।
- বাজে বা খারাপ কোয়ালিটির প্রোডাক্ট প্রোমোট করবেন না। আপনার লেখার সাথে বাস্তব অভিজ্ঞতার মিল খুজে না পেলে পাঠক আপনার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলবে।
প্রথম প্যারাগ্রাফ
- টাইটেল এর পরে এটাই আর্টিকেল এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সূচনা এমনভাবে লেখা উচিত যেন এটা পড়ে লেখক পুরো লেখাটা পড়তে উদ্বুদ্ধ হয়। এখানে পুরো আর্টিকেল এ কি কি আছে তার সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত ধারণা দেওয়া যেতে পারে।
- আপনার মেইন টার্গেট কিওয়ার্ড আর্টিকেল এর প্রথম প্যারাগ্রাফ এ ব্যবহার করুন; অন্ততপক্ষে একবার।
মূল বডি
- ‘Slippery slide’ টেকনিক ব্যবহার করুন। একটি প্যারাগ্রাফ এ এমন কিছু দিন যেটা পাঠক কে পরবর্তী প্যারাগ্রাফ পর্যন্ত যেতে উদ্বুদ্ধ করবে এবং সেখান থেকে তার পরের প্যারাগ্রাফ . . . এভাবে করে একেবারে শেষ পর্যন্ত।
- বড় বড় বাক্য এবং কঠিন শব্দের পরিবর্তে ছোট ছোট বাক্য এবং সহজবোধ্য শব্দ ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন এটা কোন একাডেমিক পেপার না।
- ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ আপনার পুরো আর্টিকেলটি ভাগ করুন। এক-একটি প্যারাগ্রাফ এর দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ৫ – ৭ লাইন।
- যেখানে সম্ভব নির্ভরযোগ্য অন্যান্য ওয়েবসাইটের রেফারেন্স ব্যবহার করুন। এটা আপনার লেখার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়ে দেবে।
- ‘Features’ এর উপরে ‘Benefits’ কে গুরুত্ব দিন। যেমনঃ প্রসেসরের ক্লক স্পিড কত এটার চাইতে ব্যবহারকারীর কাছে বেশি আগ্রহ-উদ্দীপক হবে এই প্রসেসর ব্যবহার করলে সে কত দ্রুত কাজ করতে পারবে সেটি।
- প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস নিয়ে যেসব প্রচলিত অভিযোগ বা সমালোচনা আছে সেটা খন্ডন করুন। এক্ষেত্রে আপনি প্রোডাক্ট পেজ এবং ব্যবহারকারীদের রিভিউ এর সাহায্য নিতে পারেন।
- যেখানেই সম্ভব ছোট ছোট গল্প এবং উদাহরণ তুলে ধরুন। কারন মানুষ বোরিং বর্ণনার চাইতে গল্প বেশি পছন্দ করে।
- আর্টিকেলটা ওয়েবসাইটে যেন আরামে পড়া যায় এমন ভাবে পাবলিশ করুন। ফন্টের সাইজ ১৬ থেকে ২২ এরমাঝে রাখুন। শুরুতেই একটা সূচিপত্র দিয়ে দিন; এটা পাঠক কে তার দরকারি অংশটুকু খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
- যেখানে প্রয়োজন তথ্য এবং উপাত্ত দিন। এটা আপনার লেখার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়ে দেবে।
- বড় আর্টিকেল লিখতে পারলে ভালো। কারণ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বড় আর্টিকেল (৩০০০+ শব্দ) সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করে ভালো এবং পাঠকরাও বেশি বেশি শেয়ার করে থাকেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে আর্টিকেল বড় করতে গিয়ে যেন আজে বাজে তথ্য যোগ করা না হয়।
- আর্টিকেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছবি, স্ক্রীণশট, ইনফোগ্রাফিক ইত্যাদি ভিজুয়াল এলিমেন্ট যোগ করুন। শুধুমাত্র টেক্সট নির্ভর আর্টিকেল এর মত বিরক্তিকর কিছু আর হয় না।
উপসংহার
- মূল লেখা শেষে একটা সুন্দর ট্রানজিশনের মাধ্যমে পাঠককে উপসংহার এর দিকে নিয়ে আসুন। পুরো লেখাটির একটি সারমর্ম দিন।
- পাঠককে কোন একটি একশনের আহবান করুন। এটা হতে পারে তার প্রোডাক্ট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা কমেন্ট করে জানানো অথবা বন্ধুদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করা ইত্যাদি।
- আপনার ওয়েবসাইটে আর্টিকেলের শেষে কমেন্ট অপশনটি চালু রাখতে পারেন। এতে করে আপনার সাথে পাঠকদের দ্বিমুখি যোগাযোগ স্থাপন হবে। তাছাড়াও পুরো আর্টিকেল পড়ার পরেও পাঠক পড়ার জন্য আরও কিছু বাড়তি ম্যাটেরিয়ালস পাবে।
কনটেন্ট রাইটিং আউটসোর্স করা (অন্যকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া)
আপনি যদি লেখালেখিতে পারদর্শী না হন কিংবা যদি যথেষ্ট সময় না থাকে তাহলে আপনি অন্যকে দিয়েও আর্টিকেল লিখিয়ে নিতে পারেন। অনেক ওয়েবসাইট (মার্কেটপ্লেস) আছে যার মাধ্যমে আপনি টাকার বিনিময় কনটেন্ট রাইটার হায়ার করতে পারেন। খরচ নির্ভর করবে রাইটারদের দক্ষতা এবং আর্টিকেল এর দৈর্ঘ্যর (কত শব্দের) উপর। এখানে জনপ্রিয় কিছু মার্কেটপ্লেসের নাম ও লিংক দেওয়া হলঃ
এর বাইরেও অনেক মার্কেটপ্লেস আছে। আপনি চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
৫ম ধাপঃ ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসা
আপনার ওয়েবসাইট রেডি, ভাল কনটেন্ট পাবলিস্ট করেছেন। এখন পরবর্তী কাজ যত বেশি সংখ্যক মানুষ যেন আপনার কনটেন্ট পড়ে সে ব্যবস্থা করা। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই বেশি সংখ্যক মানুষ অ্যাফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে প্রোডাক্ট কেনার সম্ভাবনা বাড়বে।
ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসার ৩ টি কমন স্ট্রাটেজি এখানে আলোচনা করা হলঃ
A. পেইড ট্রাফিক
এই স্ট্রাটেজির মাধ্যমে আপনি মূলত টাকার বিনিময় আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসছেন। এটা হতে পারে PPC (pay per click) বিজ্ঞাপন। গুগল, ফেইসবুক এবং আরো বিভিন্ন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এই মেথডের সুবিধা হলো আপনি যখনই টাকা ঢালা শুরু করবেন তখনই ট্রাফিক পাওয়া শুরু করবেন। কিন্তু এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে।
প্রথমতঃ বিজ্ঞাপন দিয়ে ট্রাফিক নিয়ে আসাটা বেশ ব্যয়বহুল। এটা শুধুমাত্র অনেক দামি প্রোডাক্ট এর ক্ষেত্রে লাভজনক হতে পারে। কম দামি প্রোডাক্ট ও যেখানে কমিশনের পরিমাণ কম এবং সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে পোষাতে পারবেন না। বিজ্ঞাপনের খরচ আপনার লাভের অংশ থেকে বিয়োগ হবে।
দ্বিতীয়তঃ যখনই আপনি বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিবেন তখনি আপনার সাইটে ট্রাফিক আসাও কমে যাবে। আপনি নিশ্চয়ই সারা জীবন বিজ্ঞাপন দিতে থাকতে পারবেন না!
সুতরাং বিজ্ঞাপন খুব একটা ভালো অপশন না। তাই আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে এবং সেটা নিয়েই আমাদের পরবর্তী স্ট্রাটেজির আলোচনা।
B. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও (SEO)
ডিজিটাল মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে খুব বেসিক ধারনা থাকলেও এই নামটা আপনার পরিচিত হওয়ার কথা। SEO (SEM নামেও পরিচিত – Search Engine Marketing) মানে ওয়েবপেজকে এমনভাবে অপটিমাইজ করা যেন তা সার্চ ইঞ্জিন (Google, Bing etc.) এর র্যাংক এ উপরের দিকে আসে। আর সাইট সার্চ ইঞ্জিনের র্যাংক যত উপরে আসবে তত বেশি ট্রাফিক আসবে – এ তো জানা কথা।
সারসংক্ষেপে বলতে গেলে SEO চারটি ধাপে করা হয়ঃ
- কিওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research): ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন যেমনঃ Google, Bing ইত্যাদি এ কি কি লিখে সার্চ করে, তাদের সার্চ ভলিউম কত, কোন কি-ওয়ার্ডের জন্য কম্পিটিশন কেমন ইত্যাদি। কি-ওয়ার্ডে রিসার্চ এর মাধ্যমে আমরা কোন কোন কিওয়ার্ড টার্গেট করে কাজ করব সেটাই নির্ধারণ করে থাকি।
- অন-পেজ এসইও (On-page SEO): যে অপটিমাইজেশন গুলো আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে করা হয় সেগুলো অন পেজ এসইও নামে পরিচিত। এর মূল উদ্দেশ্য আপনার কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিন এবং ইউজারের জন্য অপটিমাইজ করা। এর মধ্যে আছে টাইটেল অপটিমাইজ করা, ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিংক ব্যবহার করা, পেজ ইউ আর এল (URL) ঠিকভাবে ব্যবহার করা, আর্টিকেলে কোন ইমেজ ব্যবহার করলে সেটা ঠিকভাবে ব্যবহার করা ইত্যাদি।
- টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO): সাইটের টেকনিক্যাল বিষয়াদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা। যেমন ওয়েবসাইটের পেইজ লোড স্পিড অপটিমাইজেশন, সার্চ কনসোলে সাইট ম্যাপ সাবমিট করা, গুগল যেন ওয়েবসাইট ঠিকমতো ইন্ডেক্স করে সেটা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
- অফ-পেজ এসইও (Off-page SEO): মোটাদাগে বলা যায় এটা অনপেজ এসইও এর সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ যেসব অপটিমাইজেশন আপনার ওয়েবসাইটের বাইরে করা হয় তা অফ-পেজ এসইও এর অন্তর্ভুক্ত। এর মাঝে আছে ব্যাক লিঙ্ক বিল্ডিং, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিজম এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীদের জনসংযোগ বৃদ্ধি ইত্যাদি। তাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া কেন ব্যবহার করবো এটা এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।
এখানে আমরা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে আলোচনা করলাম যেটা কোনোভাবেই পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন না। তাই আপনাকে এসইও নিয়ে আলাদাভাবে পড়াশোনা করতে হবে। এজন্য আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব ভিডিও এর সাহায্য নিতে পারেন।
C. ইমেইল লিস্ট তৈরি করা
ইমেইল লিস্টের মাধ্যমে আপনার পাঠকদের সাথে আপনি যে কোন সময় যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের কাছে আপনার নতুন পাবলিশ করা আর্টিকেল সহজেই পৌঁছে দিতে পারেন এবং এর মাধ্যমে তাদের আপনার ওয়েবসাইটে বারবার নিয়ে আসতে পারেন। ফলশ্রুতিতে আপনার সেল বেড়ে যাবে।
ইমেইল লিস্ট তৈরি করতে হলে আপনার পাঠকদের স্বেচ্ছায় সাইন আপ এর জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এটা বিভিন্নভাবে করা যায়। যেমন Backlinko তাদের ওয়েবসাইটের হিরো সেকশন এ ইউজারদের সাইন আপ করতে আহবান করছে।
কিছু কিছু ওয়েবসাইট যেমন Gear Patrol তাদের নেভিগেশন বারে “Newsletter” লিংক দিয়েছে। অর্থাৎ ইমেইল লিস্ট Grow করার জন্য বিভিন্ন উপায় আছে। একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে আর তা হল আপনার ইউজারদের কোন না কোন ভ্যালু প্রোভাইড করতে হবে। সেটা হতে পারে ফ্রী ইবুক, হতে পারে এক্সক্লুসিভ কোন কোর্স ইত্যাদি।
৬ষ্ঠ ধাপ: অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক বাড়ানো
আমরা ভাল কনটেন্ট কিভাবে লিখতে হয় এবং সেই কনটেন্ট বেশি মানুষের কাছে কিভাবে পৌঁছে দিতে হয় সেগুলো নিয়ে আগের চ্যাপ্টার গুলোতে অনেক কথাবার্তা বললাম। বেশি মানুষ আপনার ভাল লেখা পড়ল কিন্তু অ্যাফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করলো না; তাহলে তো কোন লাভ নেই! তাই অ্যাফিলিয়েট লিংক এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যেন পাঠক বেশি ক্লিক করে।
ক্লিক বাড়ানোর জন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবেঃ
A. লিংক কোথায় বসাচ্ছেন (Link Placement)
আর্টিকেল এর শুরুতেই যদি অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করেন তবে তা লেখার সৌন্দর্য নষ্ট করে দিতে পারে। যদি একদম শেষে ব্যবহার করেন তাহলে বেশিরভাগ মানুষের চোখেই পড়বে না কারণ খুব কম মানুষই পুরো আর্টিকেল পড়ে। আবার প্রতিটা লাইনে লাইনে অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করতে পারবেন না; এটা আপনার লেখা স্প্যাম বলে মনে হবে।
অর্থাৎ আপনাকে সুচিন্তিতভাবে লেখার মাঝে সঠিক জায়গায় সঠিক পরিমাণে লিংক ব্যবহারের স্ট্রাটেজি বের করতে হবে। এটা নির্ভর করবে আপনার আর্টিকেলের কাঠামোর উপর।
B. প্রাসঙ্গিকতা (Context)
মনে করুন আপনি একটি আর্টিকেল লিখেছেন যার বিষয় “best kitchen knives for under $50”।
আর্টিকেল এর সূচনা কখনোই এরকম হওয়া উচিত নয়:
Today, I’m reviewing the best chef knives.
এর পরিবর্তে এমনটা হতে পারে:
Today, I’m reviewing three different chef knives you can buy on Amazon for under $50. These are, product name 1, product name 2, and product name 3
C. এমনভাবে লিংক বসান যেন তা নজর কাড়ে (Callouts)
অ্যাফিলিয়েট লিংক বসানোর জন্য বিভিন্ন Callouts যেমন: বাটন, টেবিল, বক্স ইত্যাদি ব্যবহার করুন। এসব পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
যেমন Wirecutter (একটি খুব প্রতিষ্ঠিত অ্যাফিলিয়েট সাইট) বক্স ব্যবহার করে সংক্ষেপে রিভিউ এবং তার মাঝে বাটন ব্যবহার করে প্রোডাক্ট এর লিংক দিয়ে দেয় যা খুব সহজেই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আবার PCMag বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর তুলনামূলক টেবিল ব্যবহার করে তার সাথে লিংক বসিয়ে দেয়:
বোনাস অপরচুনিটিঃ অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট বানিয়ে বিক্রি করে দেওয়া!
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি অনলাইন বিজনেস। যে কোন ব্যবসার মতই এখানেও আপনার সময়, শ্রম এবং অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীতে এই ব্যবসার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি যদি একবার কষ্ট করে আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করে ফেলতে পারেন, পরবর্তীতে আপনি খুব সামান্য শ্রম দিয়েও সেখান থেকে নিয়মিত টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের একটা বড় সুবিধা। প্যাসিভ ইনকাম। কিন্তু এখন আমি আপনাদের সামনে একটু ভিন্নধর্মী আরেকটা বিকল্প অপরচুনিটি কথা বলব!
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট এক ধরনের ডিজিটাল প্রপার্টি বা সম্পদ। অন্যান্য ফিজিক্যাল প্রপার্টি যেমনঃ জমিজমা, বাড়ি, গাড়ি ইত্যাদির মতই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইটও কেনাবেচা করা যায়। এক্ষেত্রে দাম নির্ভর করবে আপনার ওয়েবসাইটে কি পরিমান কনটেন্ট আছে এখান থেকে আপনার প্রতি মাসে কেমন আয় হয় ইত্যাদির উপর। তবে মোটা দাগে বলা যায় একটা ওয়েবসাইটের বিগত ৬ মাসের গড় মাসিক আয়ের ২০ থেকে ৩0 গুণ এককালীন দামে ওয়েবসাইটটি বিক্রি করা যায়। অর্থাৎ আপনি যদি একটা এমন একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন যেখান থেকে প্রতি মাসে ১ হাজার ডলার আয় হয় তাহলে আপনি ২০ থেকে ৩০ হাজার ডলার দামে ওয়েবসাইটটি বিক্রি করে দিতে পারবেন! এটা এই ইন্ডাস্ট্রির একটা প্রতিষ্ঠিত বিজনেস মডেল যা অনেকেই প্র্যাকটিস করছে।
বেশকিছু মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট সহ অন্যান্য ডিজিটাল প্রপার্টি কেনাবেচা হয়। আপনাদের সুবিধার জন্য এখানে টপ তিনটা মার্কেটপ্লেসের নাম এবং এ্যাড্রেস দিলামঃ
এর মাধ্যমে এই টিউটোরিয়ালটি শেষ করছি। আশা করি এর মাধ্যোমে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করব এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আপনার যাত্রা শুভ হোক।
এই গাইডটি এনড্রয়েড অ্যাপে ডাউনলোড করতে ভিজিট করুন Google Play Store.